দুর্নীতি মামলায় সাবেক বিচারপতি জয়নুল ও তার ছেলের বিচার শুরু
আদালত প্রতিবেদক
দুর্নীতি মামলায় সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলে ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার-৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি ফয়সাল পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই মামলা করে দুদক। মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের সহকারী পরিচালক গোলাম মাওলা দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আদালত সুত্র জানায়, বিচারপতি জয়নুলের পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ এক কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ টাকা। এর বিপরীতে আয়ের উৎস পাওয়া যায় এক কোটি ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৪ টাকার। তার আয়ের তুলনায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকা বেশি।
চার্জশিট থেকে আরও জানা যায়, বিচারপতি জয়নুল তার ছেলেকে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন বলে ঘোষণা দেন। এই ঋণ পরিশোধের তথ্য তার ছেলের আয়কর নথিতে উল্লেখ আছে। কিন্তু বিচারপতির আয়কর রিটার্নে ২৬ লাখ টাকা ঋণদান এবং ফেরত প্রাপ্তির কোনো তথ্য নেই। বিচারপতির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে দাখিল করা ব্যাংক স্টেটমেন্টে (২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর) তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য নেই। ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে তার দায় ক্রমান্বয়ে পরিশোধ দেখানো হলেও বিচারপতি জয়নুলের কাছে টাকা পরিশোধের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যা থেকে দুদক প্রমাণ পেয়েছে- বিচারপতি জয়নুল অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বৈধ করার জন্য ২৬ লাখ টাকা ছেলের ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন। এ ছাড়া বিচারপতি জয়নুল তার স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রাখা এবং ছেলেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য দেওয়া ২৬ লাখ টাকা নিজ আয়কর নথিতে প্রদর্শন না করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। ফয়সাল পিতার ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ২৬ লাখ টাকা বৈধ করার জন্য সম্পত্তি ক্রয় ও দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।
সাবেক এ বিচারপতি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সময় জুডিশিয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলে জানা যায়।