জোড়া মাথা আলাদা করার ৫ বছর পর সুস্থ আছে রোকেয়া ও রাবেয়া। রাবেয়ার নিউরোলজির সমস্যা আছে, সেটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। পাবনার চাটমোহর উপজেলার রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় বিরল দুই মাথা জোড়া লাগানো জমজ সন্তান।

যাদেরকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় Craniopagus Twins। মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বিকলতা। ২.৫ মিলিয়ন জীবিত জমজ শিশুদের মধ্যে মাত্র একটি জোড়া মাথার শিশু জন্ম নেয়। প্রায় ৪০% জোড়া মাথার শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে এবং আরো এক তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। আনুমানিক শতকরা ২৫ ভাগ শিশু জোড়া মাথা নিয়ে বেঁচে থাকে যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার সুযোগ রয়েছে কিন্তু এর সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই বিরল অপারেশনটি ১ম বারের মতো গত ০১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে ৩৩ ঘন্টা ব্যাপী সিএমএইচ ঢাকায় সম্পন্ন হয় যা বিশ্বে ১৭তম। অস্ত্রপচারের সবচাইতে জটিল অংশ “জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের কাজটি সম্পন্নের জন্য গত ২২ জুলাই ২০১৯ তারিখে রাবেয়া ও রোকেয়া সিএমএইচ ঢাকায় আগমন করে। পুনরায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ এবং ১৩ মার্চ ২০২০ তারিখ ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট ব্যাপী দুটি অপারেশন সিএমএইচ ঢাকায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এ অপারেশন দুটির মাধ্যমে তাদের মাথায় বিদ্যমান ক্ষতস্থান নতুন কোষ দ্বারা পূর্ণ করা হয়। ফেব্রুয়ারি ২০২২ এর শেষের দিকে রাবেয়ার মাথার বাম দিকের চামড়ার ক্ষত শুরু হয় এবং পরবর্তীতে বৃদ্ধি পেয়ে চামড়ার নিচে লাগানো কৃত্রিম মাথার খুলি দৃশ্যমান হয়। এই জটিলতা সমাধানের নিমিত্তে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ ০৭ মার্চ ২০২২ তারিখ Cranioplasty Surgery এর মাধ্যমে সিএমএইচ ঢাকায় একটি সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন করেন। বর্তমানে রোকেয়া ও রাবেয়া দুজনই সুস্থ আছে। উক্ত অপারেশনে দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকসহ শতাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অংশগ্রহণ করেন।