রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক তরুণীকে শেকলে বেঁধে ২৫ দিন ধরে করা হয়েছে নির্যাতন-ধর্ষণ। গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে সে সেই দৃশ্য ধারণ করে পাঠানো হয়েছে বিদেশে।

৯৯৯ নাইনে ফোন পেয়ে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের পর অভিযুক্ত এক নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী সেই তরুণীর ছেলে বন্ধু ব্যরিষ্টার মাসুদ নামের এক ব্যক্তি বিদেশে বসে টাকা দিয়ে গ্রেপ্তার চার জনের মাধ্যমে ভিডিওগুলো ধারণ করে বিক্রি করে থাকতে পারে বলে ধারনা পুলিশের।

গত ২৯শে মার্চ রাজধানী মোহাম্মদপুরে নবীনগর হাউজিংয়ের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় তরুণীকে শেকলে বেঁধে নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ ট্রিপল লাইনের মাধ্যমে পায় থানা পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

পরে জানা যায়, তাকে ২৫ দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে শুরু হয় অভিযান। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় এক নারীসহ চার জনকে।

জিজ্ঞাসাবাদে সামনে আসে গা শিউরে ওঠার মত গল্প। ২০১৭ সালে ভুক্তভোগীর সাথে পরিচয় হয় ব্যারিস্টার মাসুদ নামের এক ব্যক্তির‌। এরপর থেকেই তার দুজন লিভ টুগেদার করতে থাকেন। বিদেশে থাকার কারণে মাসুদ ওই তরুণীকে দেখভালের জন্য সালমা ওরফে ঝুমুর নামের আরেক তরুণীকে বাসায় রাখে। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় তরুণীর পরিচয় হয় মোহাম্মদপুরের শান, হিমেল ও রকি নামের তিন তরুণের সাথে। পরে প্রথমে প্রেম পরে শারিরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায় শানের সাথে । বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিশোধের পরিকল্পনা করে মাসুদ।

এইচ এম আজিমুল হক উপ-কমিশনার, তেজগাঁও বিভাগ, ডিএমপি পরে হাউজমেইড সালমা, ভুক্তভোগীর বন্ধু শান, হিমেল ও‌ রকিকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে পর্নোগ্রাফিতে রাজি করায় মাসুদ। কক্ষে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে বিভিন্ন সময় শানের সাথে শারীরিক সম্পর্কে ভিডিও করা হয়। বিষয়টি তরুণী জেনে গেলে শেকল বন্দি করা হয়। এরপর একে একে শান, হিমেল, রকি এমনকি হাউজমেইড সালমাও ওই ভুক্তভোগীর সাথে আপত্তিকার অবস্থায় ভিডিও করে। পরে সেগুলো পাঠানো হয় মাসুদের কাছ।

এইচ এম আজিমুল হক উপ-কমিশনার, তেজগাঁও বিভাগ, ডিএমপি বিদেশ থেকে এসব ভিডিও ধারণের জন্য গত দেড় মাসে ২ লাখ টাকা গ্রেপ্তার চার জনকে পাঠিয়েছে মাসুদ। এসব ভিডিও সে বিক্রি করে‌ থাকতে পারে বলে ধারনা পুলিশের।