ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড পলিসি ২০২৪ এর খসড়া মতামত দেওয়ার আজকে শেষ দিন। এই পলিসির বেশ কিছু সংশোধন ও পরিমার্জন এবং অন্তর্ভুক্ত করার সাথে সাথে অংশের জন্য সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নীতিমালা প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়ে সময় বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।মতামতের কিছু অংশ গণমাধ্যমে তুলে ধরে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অধিকতর গ্রাহক স্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থে ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড পলিসি ২০২৪ এর খসরায় কিছু পরিবর্তন, পরিবর্ধন মার্জনীয় বলে আমরা মনে করি। আমাদের মতামত আপনার জ্ঞাতার্থে নিম্নে প্রদত্ত হইল।অধ্যায়- ১,১.২, ব্রডব্যান্ড এর সংজ্ঞা: ব্রডব্যান্ড এর সংজ্ঞায় সর্বনিম্ন গতি ধরা হয়েছে ২০ এমবিপিএস। কিন্তু বর্তমান সময় এবং আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সর্বনিম্ন গতি ৫০ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া গতি আর সার্ভিস এক না হওয়া সত্য এখানে শুধু গতির কথা উল্লেখ করা রয়েছে ফলে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের সুপারিশ থাকবে ডাউনলোডের ক্ষেত্রে গতি হবে সর্বনিম্ন ৩৫ এমবিপিএস, আপলোড ৩০ এমবিপিএস এবং লেটেন্সি ২০ এমবিপিএস। আপনারা জানেন সাম্প্রতিক বিশ্বের ক্ষমতাধর আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশ এখন ব্রডব্যান্ডের গতি জিবিপিএস এর নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সেখানে আমরা এমবিপিএসের গতির পরিমাণ বাড়াতে পারছিনা।অধ্যায় -২,২.২.১.১, এখানে স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা সময় আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন রয়েছে কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। আমরা যদি একটু পিছনের টেলি যোগাযোগ নীতিমালা ১৯৯৮ পর্যালোচনা করি তাহলে দেখা যাবে এখন পর্যন্ত আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছি ৭.৫৭ শতাংশ। কিন্তু নীতিমালা অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার কথা ছিল ৭০ শতাংশ বর্তমান সময়ে। একইভাবে মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যেতে পারে।এছাড়াও কিছু প্রস্তাব এবং সংশোধন করার জন্য নিম্নে আমাদের সুপারিশ তুলে ধরছি ।(১) এখানে লক্ষণীয় বিষয় বর্তমান সময়ে ব্রডব্যান্ড সেবা দানকারী আই এস পি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) এর ভূমিকা ও কাজ কি এ সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা নাই।(২) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কালীন সময়ে কি পরিমান ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হবে এবং তার যোগান কিভাবে দেয়া হবে তার উল্লেখ নেই।(৩) ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করার জন্য ফাইবার অর্থাৎ (এনটিটিএন) এ ভূমিকা কি হবে এবং নিরবিচ্ছিন্ন ফাইবার সেবা দেয়ার জন্য ৬৫% ওভারহেড ফাইবার কে কিভাবে আন্ডার গ্রাউন্ডিং করা হবে সেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।(৪) বর্তমান আইএসপি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের ওভারহেড তারের জঞ্জাল নিরসনের কোন লক্ষ্যমাত্রা বা প্রস্তাব নেই।(৫) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার জন্য গ্রাহকের চাহিদা তৈরি, গ্রাহকের পর্যাপ্ত ডিভাইসের ব্যবস্থা, গ্রাহকের নিরাপত্তা, জন সচেতনতা এবং সেবার মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হবে সেই সাথে এক দেশ এক রেট অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।পলিসি বা নীতিমালার সবচাইতে বড় ভূমিকা পালনকারী গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।এছাড়াও আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংযুক্তি আবশ্যক হওয়ায় নীতিমালা নিয়ে অধিকতার আলোচনা প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর সকল স্টেকহোল্ডার ও গণমাধ্যম ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এই নীতিমালা অর্থাৎ জাতীয় ব্রডব্যান্ড পলিসি ২০২৪ বাস্তবায়ন করা হোক বলে আমরা মনে করি।