বঙ্গভবন ২৬ মার্চ ২০২৪ আঞ্চলিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে ঢাকা, থিম্পুকে যৌথভাবে কাজ করার তাগিদ রাষ্ট্রপতির আঞ্চলিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ভুটানের যৌথ সমন্বয় ও উদ্যোগের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। বাংলাদেশ সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক আজ বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সময় রাষ্ট্রপ্রধান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “দুই দেশ নিজ নিজ দেশের সম্ভাবনা ও অগ্রাধিকারকে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে পারে”। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সময়ের সাথে সাথে ইতিবাচকভাবে বিকশিত হচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, সংযোগ, কৃষি, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং পর্যটন খাতেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র চমৎকারভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপ্রধান সার্ক, বিমসটেক, এসএসইসি এবং বিবিআইএন-এর মতো আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভুটান ও বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।
৫৪তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এর বিশেষ আমন্ত্রণে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক ও রানী জেটসুন পেমা এখন চারদিনের সরকারি সফরে ঢাকায়। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ঐতিহাসিক মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরের জন্য রাষ্ট্রপতি ভুটানের রাজার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন গভীর ও ঐতিহাসিক উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান দু’দেশের অভিন্ন ইতিহাস, ভৌগলিক নৈকট্য, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য, জনগণের আকাঙ্খা পূরণে দুই সরকারই যৌথভাবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ হিসেবে ভুটানের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন এবং কৃতজ্ঞ চিত্তে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ ভুটানের প্রতি কৃতজ্ঞ”। ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সংস্কৃতিসহ সামাজিক বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি তাঁর দেশের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের উল্লেখ করেন এবং গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
ভুটানের রাজা বাংলাদেশ উৎপাদিত তৈরি পোশাক, সিরামিক ও ঔষধসহ বিভিন্ন পণ্যের গুণগত মানের প্রশংসা করেন এবং দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি শিক্ষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারেও আগ্রহ ব্যক্ত করেন। বৈঠকে ভুটানের পক্ষে, অন্যান্যদের মধ্যে সেদেশের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নামগিয়াল দরজি, পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী ডিএন ধুংগেল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী তান্ডিন ওয়াংচুক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে ভুটানের রাজা ও রানী বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ভুটানের রাজাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ভুটানের রানী জেটসুন পেমাকে আরেকটি ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে ভুটানের রাজা পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। পরে অতিথিগণ মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।