আপনি ৫ ওয়াক্ত নামাজী মানুষ অনেক পাবেন। কিন্তু উত্তম আখলাকের মানুষ কয়জন পাবেন। আমাদের মধ্যে বহু নামাজী আছে কিন্তু কতজন ব্যাক্তির নামাজ হৃদয় পর্যন্ত পৌছায়। সে নামাজ পড়ে মুখে বিশাল দাঁড়ি, কিন্তু সে অন্যের হক মারে, মিথ্যা বলে, গীবত করে ,মানুষকে ঠকায়, লেনদেনে প্রতারণা করে,আমানতের খেয়ানত করে,গালাগালি করে। বাসায় পরিবারের সাথে যা ইচ্ছা তাই ব্যবহার করে। বইয়ের দোকানে “আল-আদাবুল মুফরাদ” সাজানো কিন্তু দোকানির কথায় শিষ্টাচার নেই। এর পাঠকের মাঝে সততা নেই।

অথচ দ্বীন কি? দ্বীন হচ্ছে শান্তি দ্বীন হচ্ছে চরিত্র। রাস্তায় বের হলে মুসলমান পাই ইসলামের তো দেখা পাইনা। যে মুসলমান মিথ্যা বলবেনা। মানুষে উপর যুলুম করবেনা। অন্যের হক মেরে খাবেনা, ওয়াদা দিয়ে ওয়াদা রাখবে, ঘুষ খাবেনা, ভেজাল খাদ্য বিক্রি করবেনা। জীবন ধারনের খাদ্যের দাম বাড়াবে না। রাস্তা ঘাটে কোন কারন ছাড়া প্রতিবন্ধকতা তৈরী করবেনা। মিথ্যাকে সত্যে আর সত্যকে মিথ্যায় পরিণত করবেনা। ধর্ম নিয়ে বাড়াবারি করবেনা। ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেনা।

বড়ই দুঃখে কথা গুলো বিবৃত করলাম । আমার বাবা-মা দু’জনেই সরকারী চাকুরী করতেন একজন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সহকারী সচীব হিসেবে রিটায়ার্ড আরেক একজন সমাজ কল্যান অধিদপ্তরের আপার ডিভিশন কর্মকতা হিসেবে রিটায়ার্ড। তারা দু’জনেই এ নশ্বর পৃথিবীতে আর নেই। আমরা সব ভাই বোন এম.এ পাশ করেছি। কিন্ত ভাংগা টিনের ঘরে বড় হয়েছি। কারেন্ট ছিলনা। ধানমন্ডি বা গুলশানে কোন বাড়ি নেই। মা-বাবার জমানো টাকা দিয়ে ঢাকায় একটুকরা জমি কিনেছিলেন। তাও ১ টা বেড়ার ঘর। ইটের দালান তারা বানাতে পারেন নাই। কি অসহনীয় গরীবি জীবন। প্রতি মাসে আব্বাকে দেখেছি দানু কাকার কাছ থেকে মাস শেষে টাকা ধার করতেন। আমার গ্রাজুয়েশনের পর বাড়িতে কারেন্ট ও গ্যাসের লাইন আব্বা নিয়েছিলেন, তাও আমার মনে আছে ৮০০০/- টাকা ধার করে। আমরা ভাই বোনেরা হারিকেনের আলোতে লেখা পড়া করেছি।

খুব সামান্য সততার একটা গল্প বল্লাম কেন? এই হল ইসলাম এই হল ইবাদত এই হল সততা। এই ইসলাম তো চোখে দেখা যায় না। আর আমাদের দেশের তথাকথিত ধার্মিকরা সারা দিন অসৎ কর্ম করে বেড়ায় আর মসজিদে সেজদায় গিয়ে বেহেস্ত খোঁজে। কবি আল্লামা ইকবাল সততই বলেছিলেন- এদেশে আমি মুসলমান দেখেছি ইসলাম দেখি নাই। কিন্তু ইউরোপে কোন মুসলমান দেখি নাই কিন্তু ইসলাম দেখেছি। তার কথাই সত্য হল। আমরা যারা সৎ কর্মশীল ও শান্তি প্রিয় তাদের জন্য অবশ্যই রয়েছে মহা পুরস্কার। আল্লাহতায়ালার ভবিষ্যৎ বাণীর পূর্ণতার যুগ এটি। লুতের যুগের অসৎ মানুষ ধবংশলীলায় পতিত হয়েছিল। সমুদ জাতি ধবংশ প্রাপ্ত হয়েছিল। কারুনের সকল সম্পদ মাটি গর্ভে বিলিন হয়েছিল। উদাহরণ গুলোতো আল্লাহতায়ালা রেখে ছিলেন। কুরআনের শিক্ষা কি শুধু অতীতের জন্য? মহাপরাক্রমশালী খোদার ন্যায় বিচার অবশ্যই পৃথিবী প্রত্যক্ষ করবে। সে দিন খুব দূরে নয়! চলুন আমরা তাঁর রহমতের জন্য ক্ষমা প্রাথর্না করি। হে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা কর।ক্ষমা কর।

লেখক – মো: ইব্রহিম খলিল ভূইঞা

ছবি সূত্র : গুগল